মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত সেনাবাহিনীকে তাহের ঔপনিবেশিক এবং অনুৎপাদনশীল রাখতে চাননি। একজন ইউনিফর্মধারীর সঙ্গে একজন সাধারণ মানুষের দূরত্ব ঘোচাতে চেয়েছিলেন তাহের। সে লক্ষ্যেই বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রথম অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল হিসেবে তাহের দুর্নীতিগ্রস্ত অফিসারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। উৎপাদনশীল সেনাবাহিনী গঠনের রূপরেখা তুলে ধরেন বঙ্গবন্ধুর কাছে। কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টে লাঙ্গল সেনাদের নিয়ে গড়ে তোলেন উৎপাদনশীল এবং স্বয়ংসম্পূর্ণ ব্রিগেড। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মধ্যে প্রথম সেনা অভ্যুত্থান চেষ্টার বিরুদ্ধে তাহের অবস্থান নেন এবং অভ্যুত্থানীদের শাস্তি দাবি করেন। বলার অপেক্ষা রাখে না, তাহেরের এসব প্রচেষ্টাকে তৎকালীন সমরবিদরা সন্দেহের চোখে দেখেন এবং সরকারও একপর্যায়ে তাঁকে সক্রিয় কমান্ড থেকে সরিয়ে নিতে সচেষ্ট হয়। এমন এক পরিস্থিতিতেই তাহের বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে পদত্যাগ করেন। তাহের পরিষ্কারভাবে প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের লক্ষণ দেখতে পান বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মধ্যে। রাষ্ট্রপতিকে লেখা চিঠিতে তাহের বলেন, ‘আমি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলাম একজন পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অফিসার হিসেবে নয়, বরং একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে। আমি এটাকে আমার জন্য অত্যন্ত সম্মানজনক বলে মনে করি। জনগণের স্বার্থই আমার কাছে সর্বোচ্চ। আমি সেনাবাহিনী ত্যাগ করে জনগণের কাছে ফিরে যেতে চাই। যারা মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে আমার চারদিকে জড়ো হয়েছিল। আমি তাদের বলবো কী ধরনের বিপদ তাদের দিকে আসছে।’
সর্বশেষ খবর ও ইভেন্ট